০৯ ফেব্রুয়ারী -২৪ইং, ফেনীর কৃতি সন্তান জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন খেলাঘরের সাবেক কেন্দ্রীয় সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট বাম রাজনীতিবিদ জিয়া উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর স্মরনে ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে (৯ ফেব্রুয়ারী) বিকাল ৪টায় এক স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সদ্য প্রয়াত জিয়া উদ্দিন আহদে চৌধুরী ১৯ জানুয়ারী না ফেরার দেশে চলে যান।

আয়োজক সংগঠন খেলাঘর ফেনী জেলা শাখার সভাপতি এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম নান্টুর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক সৈয়দ মনির আহম্মদের সঞ্চালনায় জিয়া উদ্দিন চৌধুরীর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক কর্মকান্ড তুলে ধরে স্মৃতিচারণ মূলক বক্তব্য রাখেন ফেনী ইউনিভারসিটি ট্রাস্টি বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী ডা: তবারক উল্যাহ চৌধুরী বায়েজিদ,

খেলাঘর কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাইন উদ্দিন পাঠান, ভাসানী স্মৃতি সংসদ ফেনীর সভাপতি এড গিয়াস উদ্দিন নান্নু, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি- ফেনীর সভাপতি এডভোকেট বিমল চন্দ্র শীল, ফেনী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি- চ্যানেল আইর- ফেনী জেলা প্রতিনিধি রবিউল হক রবি, ন্যাপ মোজাফ্ফর ফেনীর সভাপতি সাধন সরকার, উদিচির সাবেক সভাপতি মমিনুল হক, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট- ফেনীর সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন মজুমদার, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ- ফেনীর আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন সবুজ, ড. সেলিম আলদীন চর্চা কেন্দ্রের আহ্বায়ক নাজিম সরোয়ার, দৈনিক ফেনীর সময়ের প্রতিনিধি ও সাহিত্য সভার সভাপতি কবি সাবিহ মাহমুদ, রবিন্দ্র চর্চা কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক শিখা সেন গুপ্ত ও ছাত্র ইউনিয়ন ফেনীর সাবেক ছাত্রনেতা- সবুজ প্রমুখ।


দেশবরেণ্য সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরী ও একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি বেলাল চৌধুরীর ছোট ভাই বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধ্য ব্যক্তিত্ব জিয়া উদ্দিন আহমদ চৌধুরী গত ১৯ জানুয়ারী শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি গ্রামের নিমতলির নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরদিন শনিবার সকাল ১১টায় নিজবাড়ির প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। মৃত্যূকালে তার বয়স ছিল ৮২ বছর। তার নামাজে জানাজায় এলাকার সর্বস্তরের লোকজন অংশগ্রহণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও অসংখ্য শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।

জিয়া উদ্দিন আহমদ চৌধুরী ১৯৪২ সালে ফেনী সদর উপজেলার শর্শদির উত্তর খানে বাড়ী গ্রামের নিমতলির নিজ বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৮ সালে খেলাঘর ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন এর সাথে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬২’র শিক্ষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন এবং ফেনীতে কয়েকটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গেরিলা প্রশিক্ষণ দেন।


তিনি ১৯৭২ সালে প্রথমবার খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং ১৯৯৯ সালে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক হন। পরে আবারো প্রেসিডিয়াম সদস্য হন। এছাড়া তিনি ফেনীর বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি দুই মেয়াদে ফেনী জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি ছিলেন।


শিক্ষানুরাগী হিসেবে তার সুনাম ছিল, তিনি অসংখ্য মেধাবি ও গরীব ছাত্রদের সহায়তা করেছেন। তার সহযোগীতায় অসংখ্য মেধাবী ছাত্র উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে এখন দেশের বিভিন্ন সেক্টরে জ্য্যেতি ছড়াচ্ছেন। তিনি শর্শদি গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। তিনি এয়ারফোর্সের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। এয়ারফোর্সের চাকুরী ছেড়ে রাশিয়ান কালচারাল সেন্টারে চাকুরী করেন।

বক্তারা জিয়া উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর আদর্শকে লালন করে এদেশে একটি গণতান্ত্রিক সমাজ কায়েম করার লড়াইয়ে সবাইকে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান। বক্তারা শিশু সংগঠন গড়ে তুলে এদেশে শিশুদের বাম যোগ্য পৃথিবী গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সভায় ফেনীর রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পোস্টটি শেয়ার করুনঃ