যশোরের অভয়নগরে স্মরণকালের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নওয়াপাড়া পৌর এলাকাসহ উপজেলার সাধারণ মানুষ। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ না করায় ক্ষোভে ফুসে উঠেছে অভয়নগরবাসী। দিনের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। আষাঢ়ের ভ্যাপসা গরমে একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে নারী শিশু ও বৃদ্ধদের যেন প্রাণ যায় যায় অবস্থা। আর অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হয়না।

কখনও কখনও লোডশেডিং এর স্থাায়ীত্ব হয় ১ থেকে দেড় ঘন্টা। গত কয়েক দিন ধরে এমন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বেড়েছে চুরি ছিনতায়সহ নানা অপরাধ মূলক কর্মকান্ড। নওয়াপাড়া পৌর এলাকায় বিদ্যুৎ চলে গেলে বেড়ে যায় মাদক কারবারিদের আনাগোনা। তাছাড়া সন্ধ্যার সাথে সাথে লোডশেডিং শুরু হওয়ায় পড়ালেখায় মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের। তিব্র লোড শেডিংয়ের কারণে অফিস-আদালতের কার্যক্রম পরিচালনায় চরম স্থবিরতা নেমে এসেছে। জেনারেটর, আইপিএস ও ইউপিএস দিয়ে অফিস, ব্যাংক-বীমা, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, দোকানপাট ও বাসাবাড়ি স্বাভাবিকভাবে চালানো যাচ্ছে না। পচতে শুরু করেছে বাড়ির ফ্রিজে রাখা জিনিসপত্র। আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে নওয়াপাড়ার সোনা, কাপড় ও চুড়িপট্টি।

বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সুযোগে আইন-শৃংখলার চরম অবনতি হওয়ার আশংকা করছেন এ মার্কেটের ব্যাবসায়ীরা। কাপড়পট্টির ব্যাবসায়ী মোমিন জানান, ঈদের সময় বাজারে লোকজন এসে অন্ধকার দেখে ফিরে যাচ্ছে, আমাদের লোকশান গুনতে হচ্ছে। আবার গভীর রাতে অন্ধকারে গ্রিল কেটে দোকানের মূল্যবান মালামাল চুরিরও আশংকা রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে নওয়াপাড়া বাজারের ব্যবসায়ীরা। একদিকে অভয়নগর থানার ওসি কেএম শামিম হাসান আইনশৃংখলা ঠিক রাখতে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় করছেন অপর দিকে বিদ্যুৎ বিভাগের খামখেয়ালিপনায় ম্লান হয়ে যাচ্ছে সব উদ্যোগ। এছাড়াও বিদ্যুৎ বিভাগের অব্যবস্থাাপনায় শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে বিভিন্নস্থাানে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার উপজেলার দেয়াপাড়া নামক এলাকার বাজারে দিশামণি স্টোর নামের একটি মুদি দোকানে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দিশামণি স্টোরের মালিক নাহিদ মোল্যা বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়িতে যায়। আমার দোকানে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে দৌড়ে গিয়ে দেখি সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে নওয়াপাড়া ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার টিটব শিকদার জানান, শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত। আগুন নেভাতে আমাদের টিম প্রায় ৪০ মিনিট সময় ধরে কাজ করেছে। এছাড়াও উপজেলা সংলগ্ন একটি বাড়ির মিটার শর্ট সার্কিটের কারণে পুড়ে ছায় হয়ে যাওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। স্থাানীয়দের অভিযোগ যশোর পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ডিজিএম আব্দুল্লাহ আল মামুনের খামখেয়ালীপনায় এমন অতিরিক্ত লোডশেডিং এর শিকার হতে হচ্ছে। এব্যাপারে মুঠোফোনে ডিজিএম আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে কোন কথা বলতে রাজি হননি। যদি কিছু জানার থাকে তাহলে অফিসে আসেন বলেই ফোন কেটে দেন।

পোস্টটি শেয়ার করুনঃ