অনেকের ক্ষেত্রেই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিশক্তি কমার লক্ষণ দেখা যায়। কেবল তা-ই নয়, সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের ক্ষমতাও কমে যেতে শুরু করে। ফলে ডিমেনশিয়া বা আলঝেইমার্সের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়তে থাকে। তাই মস্তিষ্কের মনে রাখার ক্ষমতা যাতে কমে না যায় সেদিকে নজর রাখা জরুরি।

কিন্তু কিভাবে এটা আটকানো যায়, এমনটা ভাবছেন যারা তারা জেনে নিন, কিছু খাবার নিয়মিত খেলে স্মৃতিলোপ পাওয়ার সমস্যাকে আটকানো কিন্তু সম্ভব। হালে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির গবেষকদের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, কয়েকটি খাবার স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া এবং মস্তিষ্কের অন্য রোগের সমস্যা রুখতে সাহায্য করে। জেনে নিন সেসব খাবার সম্পর্কে- 

নারকেল তেল 

এই তেলে বিদ্যমান কিছু উপাদান নিউরনের ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। সেই সঙ্গে শরীরে উপস্থিত নানাবিধ ক্ষতিকারক উপাদান যাতে মস্তিষ্কের ভেতরে কোনো ক্ষতি সাধন করতে না পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখে।

 

ব্রকোলি

এ সবজিতে সালফারাফেন নামক একটি উপাদানের প্রাচুর্য রয়েছে। তাই এ সবজিটি খাওয়ামাত্র শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদান বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে ব্রেন সেলের কোনো ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

ডিম 

এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় কোলিন এবং উপকারী কোলেস্টেরল, যা নিউরনের ক্ষমতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে সার্বিকভাবে ব্রেনের ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

এখানেই শেষ নয়, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ডিম খেলে দেহে বিশেষ একধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা ব্রেন সেলের যাতে কোনোভাবে ক্ষতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে। 

food
কোলিন এবং উপকারী কোলেস্টেরল, নিউরনের ক্ষমতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে সার্বিকভাবে ব্রেনের ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে

আখরোট

এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, কপার, ম্যাগনেসিয়াম ও ফাইবার, যা নানাভাবে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে কাজে লাগে। সেই সঙ্গে দেহে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাও বাড়ায়। ফলে সব দিক থেকে মস্তিষ্কের উপকার হয়।

হলুদ

এই প্রাকৃতিক উপাদানটি ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে দারুণ কাজে আসে।

হলুদে উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকর উপাদান একদিকে যেমন মস্তিষ্কের ভেতরে প্রদাহ কমায়, অন্যদিকে বুদ্ধির বিকাশেও সাহায্য করে। 

পালং শাক

এই শাকে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন কে, ফলেট ও লুটেইন ব্রেনের কর্মক্ষমতা বাড়াতে দারুণ কাজে আসে। ফলে নিয়মিত এই শাকটি খেলে স্বাভাবিকভাবেই ব্রেনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

টমেটো

এতে উপস্থিত ক্যারোটিনয়েড, লাইরোপেন ও বিটা-ক্যারোটিন ব্রেনে উপস্থিত টক্সিক উপাদান বের করে দেয়। ফলে মস্তিষ্কের কোনো ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে। সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তির উন্নতি হয়, বুদ্ধি ও মনোযোগ ক্ষমতার উন্নতি ঘটতেও সময় লাগে না।

কফি

ব্রেনের ক্ষমতা বাড়াতে এই পানীয়টি নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। কফিতে উপস্থিত একাধিক উপকারী উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর মস্তিষ্কের ক্ষমতাকে এতটাই বাড়িয়ে তোলে যে আলঝেইমার্সের মতো রোগ ধারেকাছে ঘেঁষার সুযোগ পায় না। সেই সঙ্গে মাথা যন্ত্রণা কমে, শর্ট টার্ম মেমোরি জোরদার হয়ে ওঠে এবং পার্কিনসনের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও আর থাকে না।

মাছ

বেশি তেল রয়েছে এমন মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড নামে একটি উপাদান থাকে, যা মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে দারুণ কাজে আসে। আসলে এই উপাদনটি ব্রেন সেলের ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মস্তিষ্কের যে অংশটা স্মৃতিশক্তির আধার, সেই অংশের ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে।

অলিভ অয়েল

এই তেলটিতে রয়েছে পলিফেনল নামে একটি উপাদান, যা ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে দারুণ কাজে আসে। পলিফেনল নামক উপাদানটি নার্ভ সেলের কর্মক্ষমতা বাড়য়ে দেয়। ফলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

পোস্টটি শেয়ার করুনঃ