অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন কিছু কথা
অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন কিছু কথা
[লেখক: আমির হোসেন পাটোয়ারী]
১৯৬৭ ইং সনের আগে বা পাক আমলে পাঠান নগর কাছারী বাজার এলাকার শিক্ষা দিক্ষা, যোগাযোগ, সামাজিক উন্নয়ন ব্যবস্থার কোন উন্নয়ন ছিল না। এখানে পঞ্চগ্রাম বলতে ( পাঠানগড়, পাঠান নগর, গন্ধব্যপুর, সোনাপুর ও কাতালিয়া কে বুঝায়। শিক্ষা দিক্ষা যোগাযোগ ব্যবস্থা ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য ১৯৬৭ সনে ১০ম শ্রেণী পড়–য়া ছাত্র বাংলার দামাল ছেলে জনাব আবদুর রব সর্বপ্রথম পঞ্চগ্রামকে উন্নয়নে সিনিয়র ও জুনিয়র ছাত্রদেরকে সংঘটিত করার উদ্যোগ গ্রহন করেন। তার উদ্যোগ অত্র এলাকার সিনিয়র ও জুনিয়র ছাত্ররা পাঠান নগর প্রাথমিক বিদ্যালয় একত্রিত হইয়া উপদেষ্টা কমিটির ও কায্যাকরী কমিটি গঠন করেন। এই মিলিত সভায় অনুন্নত এলাকার উন্নয়নের লক্ষ্যের অগ্রণী সংসদ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন গঠন করা হইল। তাদের নাম পর পৃষ্ঠায় পাতায় কলামে দেখানো হইল। পরবর্তীতে এই কমিটির মাধ্যম গণশিক্ষা, যোগাযোগ উন্নয়ন ও সামাজিক ব্যবস্থা, উন্নয়ন স্বেচ্ছাশ্রমের এগিয়ে যায়। ১৯৭১ সনে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই পঞ্চগ্রাম এলাকার একটি মাধ্যমিক স্কুল স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা হওয়ার অগ্রণী সংসদের পূর্বে গঠিত কমিটি উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কিন্তু স্কুল নির্মাণের জায়গা ও প্রয়োজনীয় অর্থের সংকট সৃষ্টি হয়। ঐ সময় ২ জন তুখোড় ছাত্র (১) জনাব মো: শাহ আলম মজুমদার (২) জনাব মোহাম্মদ উল্যাহ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন জমি ও অর্থের কোন সমস্যা হবে না। পঞ্চগ্রাম নিয়া সভা ডাকা হইল। যে জমিতে বর্তমানে স্কুল স্থাপন করা হইল সে জমির মালিকদের আমন্ত্রণ করা হইল। জনাব মো: শাহ আলমের সভাপতিত্বে ও মোহাম্মদ উল্যাহর সঞ্চালনায় সভার কাজ আরম্ভ হইল। প্রথমে জমি মালিকদের কে সবিনয় প্রস্তাব দেওয়া গেল। তারা স্কুল স্থাপনের প্রতি উৎসাহিত হইয়া মুক্ত হস্তে যার যার যতটুকু জমিন আছে তাহা স্কুলকে দান করেন। এই জমিদারদের নাম ৩নং পাতার পাতার খ কলামে দেখানো হইল। অর্থের জন্য উপস্থিত জনগণের নাম ধরে চাদার জন্য ডাকা হইল। তারাও সামর্থ অনুযায়ী চাদা দিলেন। উক্ত সভায় নিঃস্বার্থ সমাজকর্মী জনাব আলী আহম্মদ টাকা দেওয়ার সমর্থ না থাকায় দৌড়ে বাড়ি গিয়া ১ মুট মুকনা মরিচ দান করে এবং সভায় লোকজন স্বজোরে করতালী দিয়ে তাকে অন্যানেদের কে উৎসাহিত করেন। পরবর্তীতে অগ্রণী সংসদের কার্যকরী কমিটি পঞ্চগ্রাম থেকে বাঁশ, বেত ও পুরাতন টিন বিনামূল্যে সংগ্রহ করেছিলেন। সদ্য স্বাধীন দেশের ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বার কিছু লং ক্লথ কাপড় দান করিলেন তাহা বাজারে বিক্রি করিয়া অর্থ সংগ্রহ করা হয়। জনাব রাজা মিয়া মেম্বার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ১১০০/= টাকা স্কুল ঘর তৈরির জন্য দান করেন। ৪ কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনের ঘর নির্মাণ করিয়া ১৯৭৩ সালে অবৈতনিক শিক্ষক নিয়োগ দিয়া নি¤œ মাধ্যমিক স্কুল পরিচালনা করা হয়। এই বৎসর অগ্রণী সংসদের উপদেষ্টা কমিটি ও কার্যকরী পূর্ণ সভায় মিলিত হইয়া এই মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, যেহেতু স্কুলটি অগ্রণী সংসদের উদ্যোগে অগ্রণী সংসদ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। কোন ব্যক্তি বিশেষের উদ্যোগে ও সাহায্যের হয় নাই। পঞ্চগ্রামের অগ্রণী সংসদ এর নামের সাথে মিল রেখে অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয় নাম করণ করা হয় এবং উপদেষ্টা ও কার্যকরী কমিটির সভায় প্রতিষ্ঠাতা অগ্রণী সংসদ সর্বসম্মতি ক্রমে পাশ করা হয়। অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়টি স্থাপিত হইয়াছে ৪৪ বৎসর। ৪৪ বৎসর পূর্বে টিনের একটি সাইন বোর্ড ছিল। এই সৎসর পঞ্চগ্রামের একজন দানবীর ও সফল ব্যবসায়ী জনাব আজিম উদ্দিন ফরাজীর উদ্যোক্তা নিজ তহবিল হইতে একটি পাকা সাইন বোর্ড নির্মাণ করিয়াছেন। উক্ত সাইন বোর্ডে নাম ফলকে ১৯৭৩ সনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা অগ্রণী সংসদ এই নামে যাহাতে লিখা হয়। তাহা না হইলে জমি দানকারী অর্থ ও সমাজকর্মী জনাব আলী আহাম্মদ মরিচ দানকারীদের আত্মার শান্তি আসবে না। অত্র এলাকার জনগণের মধ্যে ক্ষোভ দু:খ অসন্তোষ সৃষ্টি হইবে। এই ক্ষোভ দুঃখ ক্ষেত্রে অসন্তোষ সৃষ্টি হইবে।
অগ্রণী সংসদ প্রতিষ্ঠা লগ্নে উপদেষ্টা কমিটি ও কার্য্যকরী কমিটির সদস্যদের নাম
জনাব মোঃ শাহ আলম মজুমদার, মোহাম্মদ উল্যাহ, আবদুর রব, আলী আহামেদ আলী শাহ জাহান, সহিদুল আলম মজুমদার, আমিনুল হক পাটোয়ারী, নুরুল আলম মজুমদার, আবদুল জলিল ভূঁঞা, ছালে আহম্মেদ মজুমদার, আবু তাহের মজুমদার, জালাল আহম্মেদ , আবদুল হাদী, সিরাজদৌল্লা মজুমদার, আবুল কাশেম পাটোয়ারী, আমির হোসেন পাটোয়ারী, আবদুল হাই মাসুম, আবু আহম্মেদ মজুমদার, আবুল খায়ের, শাহাজান, আমির হোসেন মজুমদার, আবুল খায়ের, আবদুল হালিম মজুমদার, মৌলভী আবদুস ছোবহান, রবিউল হক পাটোয়ারী, আবু তালেব।