৩১ ডিসেম্বর- ২৩, ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পঞ্চগায়েঁর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয় ৫০ বছর পূর্ণ করে ৫১তম  বছরে পদার্পণ করবে। ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারী পঞ্চগায়েঁর ঐক্যের প্রতীক অগ্রণী সংসদের উদ্যোগে এ প্রতিষ্ঠান কর্যক্রম শুরু করে। পাঠান নগর ইউনিয়ন পরিষদ উত্তরাঞ্চলের পিছিয়ে পড়া এলাকা, পূর্ব পাঠানগড়, পাঠাননগর, কাতালিয়া, গন্ধব্যপুর ও সোনাপুর পাঁচ গ্রামের যুব সমাজ সংগঠিত হয়ে অগ্রণী সংসদ গঠিত হয়ে এলাকায় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন শুরু হয়।

১৯৬৭ সালে অগ্রণী সংসদ প্রতিষ্ঠিত হলে এ অঞ্চলের উদীয়মান তরুণরা শিক্ষা বিস্তারের লক্ষে ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারি হইতে অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণী কার্যক্রম শুরু করেন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির প্রথম সভাপতি আলহাজ¦ সুজা মিয়া সওদাগর এবং ১ম প্রধান শিক্ষক অলিউর রহমান।

যুব সমাজকে সংগঠিত এবং উদ্বুদ্ধ করেন ফেনী বারের সিনিয়র আইনজীবি এডভোকেট আবদুর রব। অগ্রণী সংসদকে প্রতিষ্ঠা কর্যক্রম পরিচালনায় মরহুম ইঞ্জিনিয়ার শাহ আলম মজুমদার বলিষ্ঠ ভ‚মিকা পালন করেন, অগ্রণী সংসদে নিবেদিত প্রাণ কর্মী হিসাবে কাজ করেন, তিনি অগ্রণী সংসদ এর প্রতিষ্ঠাতা। যারা পরবর্তীতে সামাজিক দায়িত্ব পালন করার সাথে সাথে শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হয়ে সারাজীবন অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের নিবেদিত প্রাণ হিসাবে নিজেদের বিলিয়ে দেন তারা হলেন- আবু তাহের মজুমদার ও আমিনুল হক পাটোয়ারী, আবুল খায়ের মাষ্টার ও হানিফ মজুমদার।
পিছিয়ে পড়া আর্থিক অস্বচ্ছল পঞ্চগায়ের এ প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখার জন্য আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে পাশা পাশি শিক্ষকাতার পেশায় নিয়োজিত হয়েছিলেন  যিনি অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা  অধ্যাপক মোহাম্মদ উল্যাহ এবং অত্র বিদ্যালয়ের জন্য নিবেদিত প্রাণ হিসাবে কাজ করেছেন পাঠান নগর ইউনিয়ন এর সাবেক চেয়ারম্যান যিনি প্ঞ্চগ্রাম এবং অগ্রণী সংসদের প্রার্থী হয়ে  চেয়ারম্যঅন নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং অগ্রণী স্কুলের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন এবং বিদ্যালয়ে প্রধাণ শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি আলী আহাম্মদ আল শাহজাহান।

রুপ রঙ্গে, অভিজাত্যের অধিকারী, সুদর্শন এক উদীয়মান যুবক উচ্চ শিক্ষা লাভ করার পরও সারা জীবন অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের অতন্দ্র প্রহরীর মত নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন যিনি, তিনি হলেন অধ্যাপক মোহাম্মদ উল্যাহ। আর্থিক লোভ লালসার উর্ধ্বে, প্রবল ব্যক্তিত্বে অধিকারী যার নেতৃত্বে এ বিদ্যালয় পরিচালনা হয় এবং শত শত ছাত্র-ছাত্রী সুশিক্ষা অর্জন করে যোগ্য নাগরিক হয়ে দেশে বিদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত এবং এলাকার মান সম্মান সম্মুজ্জল করেছেন। অধ্যাপক মোহাম্মদ উল্যাহ এই প্রতিষ্ঠানের পাশে থেকেই পঞ্চগাঁবাসীকে একত্রিত করে এ প্রতিষ্ঠান সুচারু রূপে পরিচালনা করেছেন সুদীর্ঘকাল। তাহার শ্রদ্ধেয় পিতা অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মরহুম মুজা মিয়া সওদাগরের পুরাতন টিনের ঘর ভেঙ্গে এ বিদ্যালয়ের প্রথম ঘর নিমাণ করে শ্রেণী কার্যক্রম শুরু করেছিলেন মোহাম্মদ উল্যাহ প্রফেসর। তিনি প্রতিষ্ঠাতা এবং তার পিতা মরহুম মুজা মিয়া সওদাগর ৮০ শতক ভূমি বিদ্যালয়েল জন্য দান করেছেন। এই বিদ্যালয়ে মরহুম মফিজুর রহমান হেড মাষ্টার,  জাহিদ সরওয়ার,  তফজল হোসেন,  রফিকুল হকসহ বহু কৃতি প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব পালন করেছেন।

যাদের কাছে অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয় চির কৃতজ্ঞ

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

২০২৪ সালে অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয় সুপ্রতিষ্ঠিত। সবুজ শ্যামল গাছ গাছালিতে ভরপুর চারিদিকে দেয়াল ঘেরা নিবিড় সুরক্ষিত সুন্দর পরিবেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পঞ্চগায়ের কচি কাচাদের মিলন মেলা। সুন্দর সুন্দর দৃষ্টিনন্দন অট্রালিকা, সাজানো গোছানো শ্রেণী কক্ষের রূম, বিদ্যালয়ের দেয়ালে আঁকা ছবি ও নকশা, অবকাঠামো উন্নয়ন, একঝাঁক তরুণ প্রতিভাবান দক্ষ অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলী ও অভিজ্ঞ দক্ষ বিচক্ষণ ও প্রভাবশালী ম্যানেজিং কমিটি যার মধ্যমণি হিসাবে কাজ করছেন ৬নং পাঠান নগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল হায়দার চৌধুরী জুয়েল। তার নেতৃত্বেই এলাকার ও বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধি নিয়ে সুবর্ণ জয়ন্তীতে বলিষ্ঠ ম্যানেজিং কমিটি নিম্নরূপ-
১. রফিকুল হায়দার চৌধুরী জুয়েল – সভাপতি।
২. আবুল কালাম পাটোয়ারী – দাতা সদস্য।
৩. মুছা আহম্মদ ভূঁইয়া- কো- অপ্ট ( বিদ্যোৎসাহী) সদস্য।
৪. আবুল মনছুর আহম্মদ চৌধুরী – অভিভাবক সদস্য।
৫. মাহফুজের রহমান- অভিভাবক সদস্য।
৬. কাজী জামাল উদ্দীন- অভিভাবক সদস্য।
৭. রসুল আহম্মদ- অভিভাবক সদস্য।
৮. মর্জিনা আক্তার – সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক সদস্য।
৯. জয়নুল আবেদীন – সাধারণ শিক্ষক প্রতিনিধি।
১০. সাইফুল ইসলাম – সাধারণ শিক্ষক প্রধিনিধি।
১১. লুৎফুন নাহার বেগম- সংরক্ষিত মহিলা শিক্ষক প্রতিনিধি।
১২. প্রধান শিক্ষক – সদস্য সচিব।

 

 

এ বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছেন। ম্যানেজিং কমিটির পরিচালনায় এ শিক্ষালয় সারা জেলায় পরিচিত।
৫০ বছরে অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের অনেক অর্জন। এ বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা মেশে বিদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত। আনোয়ার হোসেন মিজি ও আরিফুর রহমানরা ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ও চরগ্রাম বিশ^ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করেন। এরা এ বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র। এরা পঞ্চগায়ের প্রেরণা।

 


অগ্রণী সংসদ ও পঞ্চগায়ের তৎকালীন যুবসমাজ স্বাধীনোত্তর যে প্রত্যাশা নিয়ে স্বেচ্ছায় নিবেদিত হয়ে অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ে শ্রম দিয়েছিল, তাদের প্রত্যাশা ছিল এ বিদ্যালয় দেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠন হয়ে দক্ষ ও যোগ্য সুনাগরিক গড়ে তুলবে, এ বিদ্যালয়ের ছাত্ররা দেশের জাতীয় নেতৃত্ব দিবে, এলাকার মান সম্মান রক্ষা করবে, উদ্যোক্তারা ও এলাকাবাসী যে প্রত্যাশা পুরণের লক্ষে পঞ্চগায়ের যৌথ নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত এ শিক্ষালয়ের অর্জন অনেক। তবুও প্রাপ্তী অনুযায়ী প্রত্যাশা এখনো পুরণ হয় নাই। সে লক্ষে বিদ্যালয় ৫০ পেরিয়ে ৫১ তে পদার্পণ করছে। পঞ্চগাঁবাসীর এ প্রতিষ্ঠানের কাছে চাওয়া পাওয়া অনেক। সে অবিষ্ট লক্ষে বিদ্যালয় পরিচালিত হচ্ছে।

দক্ষ ও বিচক্ষণ প্রধান শিক্ষক নিখিল চন্দ্র নাথের নেতৃত্বে এক দল শিক্ষক কর্মচারী যারা হলেন-


১. নিখিল চন্দ্র নাথ – প্রধান শিক্ষক।
২. বাহাদুর হোসেন – সহ: প্রধান শিক্ষক।
৩. জয়নুল আবেদীন – সিনিয়র শিক্ষক।
৪. আবু ইউসুফ চৌধুরী – সিনিয়র শিক্ষক।
৫. লুৎফুন নাহার বেগম- সিনিয়র শিক্ষক।
৬. সাইফুল ইসলাম – সহকারী শিক্ষক।
৭. মো: আজমীর হোসেন- সহকারী শিক্ষক।
৮. কাজী রেজাউল করিম – সহকারী শিক্ষক।
৯. মো: বদরুল আলম- সহকারী শিক্ষক।
১০. জয়নাল আবেদীন – অফিস সহকারী।
১১. আবু তালেব- পিয়ন।
১২. ফাতেমা খাতুন- আয়া।
১৩. কাশেফা আক্তার- অফিস সহায়ক।
১৪. সাইদুল ইসলাম – নৈশ প্রহরী

বর্তমান বিদ্যালয়ে চার শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। ২০২৪ সালে  ৪৬ জন পরিক্ষার্থী এসএসসি পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। এ প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রীরা কো-কারিকুলাম কার্যক্রমের সাথে জড়িত। খেলাধুলায় জেলা ইর্ষন্বীয় স্থান অবস্থান করে আছেন।

অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সমিতির উদ্যেগে “প্রদ্বীপ” নামে  আমাদের এই অনলাইন  পত্রিকায় আগামী ১লা জানুয়ারি একটি বুলেটিন প্রকাশিত হবে। অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের অত্র বিদ্যালয়ের ছাত্রদের দ্বারা সম্পাদিত দেয়ালিকা (প্রদ্বীপ) প্রকাশিত হতো। ২০১৩ সালে প্রাক্তন ছাত্র সমিতির সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিদ্যালয়ে্র এবং পঞ্চগায়ের ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে প্রদ্বীপ নামে  একটি স্মারক গ্রন্থ  প্রকাশিত হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। প্রদ্বিপ প্রকাশ করার জন্য  আমরা তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ক্রমে স্মরণিকা  ছাপানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলাম। স্মরণিকার পান্ডুলিপি তৈরি করে তৎকালীন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আরমান হোসেন এর তত্ত্যাবধানে ঢাকার আরামবাগে একটি ছাপাখানায় দেয়া হয়েছিল ২০১৮ সালে। কিন্তু দূর্ভাগ্য বশত উক্ত স্মারক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়নি। অনেক তথ্য উপাত্ত নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের কিছু তথ্য উপাত্ত সম্পাদক এবং অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও প্রাক্তন ছাত্র সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট খোরশেদ আলম খোন্দকারের নিকট রক্ষিত আছে। উক্ত তথ্য উপাত্ত সমূহ পঞ্চগায়ের ইতিহাস ঐতিহ্যকে সংগ্রহ করার জন্য  “প্রদ্বীপ” নামে একটি বুলেটিন এর মাধ্যমে এই পত্রিকায় প্রকাশ করা হবে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ভূল ত্রুটি হইলে তা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং পত্রিকা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে আমরা সংশোধন করার চেষ্টা করব। আপনাদের কাছে কোনো তথ্য উপাত্ত, ছবি থাকলে তা আমাদের নিম্নে প্রণীত যোগাযোগ মাধ্যম আপনার নাম এবং ছবিসহ ‍উক্ত তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করিবেন।

হোয়াটসঅ্যাপ: 01603-145881

ইমেইল: ucchash321@gmail.com

ফেসবুক: দৈনিক প্রতিভা [এখানে ক্লিক করুন]

আমাদের সাথে সংযুক্ত থাকুন:

হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ: দৈনিক প্রতিভা [এখানে ক্লিক করুন]

ফেসবুক: দৈনিক প্রতিভা [এখানে ক্লিক করুন]

ইউটিউব: দৈনিক প্রতিভা  The Daily Protibha [এখানে ক্লিক করুন]

পোস্টটি শেয়ার করুনঃ